ঢাকা, শনিবার ১৮, মে ২০২৪ ১১:৪০:৫০ এএম

First woman affairs online newspaper of Bangladesh : Since 2012

Equality for all
Amin Jewellers Ltd. Gold & Diamond
শিরোনাম
রাজধানীতে কক্সবাজার এক্সপ্রেসের বগি বিচ্ছিন্ন সৌদি আরবে বাংলাদেশি হজযাত্রীর মৃত্যু ঢাকায় গুঁড়ি গুঁড়ি বৃষ্টি, জনজীবনে স্বস্তি গণভবনে ফুলেল ভালোবাসায় সিক্ত শেখ হাসিনা ৬ জুন বাজেট দেবো, বাস্তবায়নও করবো: প্রধানমন্ত্রী নিত্যপণ্যের বাজারে আগুন, অসহায় ক্রেতারা

ঈদে হাতের কাজ ও সেলাইয়ে ব্যস্ত নারী কারিগরা 

নিজস্ব প্রতিবেদক | উইমেননিউজ২৪

প্রকাশিত : ১২:৪৬ পিএম, ২৯ এপ্রিল ২০২২ শুক্রবার

ফাইল ছবি

ফাইল ছবি

ঈদ-উল-ফিতর উপলক্ষে নগরীর অভিজাত মার্কেটগুলোতে হাতের কাজ করা পোশাকের ব্যাপক চাহিদার পরিপ্রেক্ষিতে অনেক নারী কারিগর অতিরিক্ত মান, ফ্যাশন ও ডিজাইনের সমন্বয়ের মাধ্যমে তাদের বাহারী হাতের কাজের মেয়েদের পোশাক সেলাইয়ের ব্যস্ত সময় পার করছেন।
কর্মকর্তা, উন্নয়ন বিশেজ্ঞ ও এনজিও কর্মকর্তারা বলেন, রংপুর বিভাগের প্রায় ৪০ হাজার নারী এবং স্থানীয় উদ্যোক্তা বছরের এই বিশেষ সময়ে আয় বাড়াতে ঘরে বসে শোভাবর্ধক সূচিকর্মে ব্যস্ত রয়েছেন।
বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প কর্পোরেশন (বিসিক) রংপুরের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার মো. শামিম হোসেন বলেন, ‘নারী কারিগররা শাড়ি, থ্রি পিস ও অন্যান্য কাপড়ে এমব্রয়ডারি, চুম্কি ও  শোভাবর্ধক হাতের কাজ করছেন।’
মেয়েদের কাপড়ে শোভাবর্ধক হাতের কাজ দারিদ্র্য দূর করতে বেকার নারীদের আত্ম-কর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে একটি লাভজনক উদ্যোগ হিসেবে কোভিড-১৯ এর আগে থেকেই গ্রামীণ অর্থনীতিতে অনেক ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে।
বিসিক, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর, বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন বোর্ড, মহিলা অধিদপ্তর, সমাজ সেবা অধিদপ্তরসহ অন্যান্য বিভাগ এবং এনজিও উদ্যোক্তা ও ব্যবসায়ীদের নিয়ে এই খাত সম্প্রসারণে সহায়তা করছেন।
রংপুরে যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. আব্দুল খালেক বলেন, যুব উন্নয়নের সহায়তায় রংপুরের প্রায় ৩ হাজার গ্রামীণ নারী তাদের ভাগ্য পরিবর্তন করে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে উন্নত জীবন যাপন করছেন।
যুব উন্নয়ন যুব নারী, তালাকপ্রাপ্তা ও দুস্থ নারীদের আত্ম নির্ভরশীল করতে সেলাই ও এমব্রয়ডারি বিষয়ে প্রশিক্ষণ ও সহজ শর্তে  ঋণ প্রদান করছে।
খালেদ আরও বলেন, বাড়ি-ভিত্তিক ও উদ্যোগ-ভিত্তিক এমব্রয়ডারি কাজ বেকার যুব নারীদের অনেককে আত্ম কর্মসংস্থানের মাধ্যমে দারিদ্র্য দূরিকরণে ও গ্রামীণ অর্থনীতি পরিবর্তনে একটি ক্রমবর্ধমান কুটির শিল্পের পরিসর তৈরি করেছে।
রংপুরে মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের উপপরিচালক কাওসার পারভিন বলেন, গত ১৩ বছরে এই অধিদপ্তরের সহায়তায় সেলাই ও এমব্রয়ডারি প্রশিক্ষণ নিয়ে রংপুরের প্রায় সাড়ে তিন হাজার বেকার যুব নারী বেশ ভালো আয় করছেন।
নারী উদ্যোক্তা সানজিদা লোপাকে বলেন, তিনি একটি বুটিক হাউস করেছেন। সেখানে ১২ জন যুব নারী কাজ করে প্রতিমাসে মাসে ১২ হাজার টাকা করে আয় করছেন।
তিনি বলেন, ‘আমরা ঈদ-উল-ফিতর উপলক্ষে গত বছরের চেয়ে এ বছর প্রচুর ওর্ডার পাওয়ায় শাড়ি, থ্রি পিস ও অন্যান্য কাপড়ে এমব্রয়ডারি, চুম্কি ও হাতের কাজের চাহিদা নিয়ে এখন বেশ চাপের সম্মুখীন হয়েছি।’
রংপুরের বদরগঞ্জ উপজেলার চানকুটি দাঙ্গা গ্রামের উদ্যোক্তা চাঁদ মিয়া বলেন, অনেক দুস্থ গ্রামীণ নারীদের দক্ষ চুমকি ও এমব্রয়ডারি কারিগর তৈরির মাধ্যমে এই শিল্পের প্রসার ঘটছে।
ক্রাফ্ট শিল্পী শামিমা, মর্জিনা, সোহানা ও মল্লিকা জানান, তারা সুনিপূণ সূচিকর্মের মাধ্যমে আত্ম নির্ভরশীলতা অর্জন করেছেন। চানকুটি দাঙ্গা গ্রামের মত অন্যান্য গ্রামের নারী, বেকার মেয়ে ও কিশোরীরা স্বাবলম্বী হয়েছে।
নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার সফল ক্রাফ্ট শিল্পী আনোয়ার কলি, মেহবুবা, শাবানা বেগম, সালেহা খাতুন এবং নূরজাহান জানান, তারা ঈদ-উল-ফিতরের আগে এমব্রয়ডারি কাজের মাধ্যমে ১০ হাজার থেকে ২০ হাজার টাকা আয় করছেন।
কুরিগ্রামের উলিপুর উপজেলার এক উদ্যোক্তা ফরিদা পারভিন বলেন, মেয়েদের কাপড়ে বাহারী সূচিকর্মের মাধ্যমে তার প্রতিষ্ঠান এই উপজেলার ৬শ’ ও বেশি যুব নারী আত্ম নির্ভরশীল হয়েছেন।
ফরিদা আরও বলেন, শাড়ি, থ্রি পিস ও মেয়েদের অন্যান্য কাপড়ে কারুকার্যের সাথে চুমকি ও বাহারী সূচিকর্মের ক্ষেত্রে তাদের অভিজ্ঞতা ও মানের ওপর ভিত্তি করে কারিগররা প্রতিমাসে ১০ হাজার থেকে ১৮ হাজার টাকা আয় করছে।
রংপুর-ভিত্তিক ‘নর্থবেঙ্গল ইনস্টিটিউট অব ডেভলপমেন্ট স্টাডিস’র চেয়ারম্যান ড. সৈয়দ সামসুজ্জামান বলেন, এমব্রয়ডারি ও চুমকির কাজ গ্রামীণ নারীদের উদ্যোক্তা তৈরি করে গ্রামীণ মাইক্রো-অর্থনীতিতে পরিবর্তন এনেছে। যা কুটির শিল্পের এক বিশাল অর্জন।